সিবিএন ডেস্ক ;
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি এই বাংলাদেশ। সবুজ বন, সুবিশাল ম্যানগ্রোভ বনরাজি, নদী-নালা, শ্যামল পাহাড়, বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত, প্রাচীন ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন—সবই এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখলে চোখ ঝলমলিয়ে যায়। এই রূপমুগ্ধ, বিষয়-পুলকিত কবি বাংলাকে ‘রূপসি বাংলা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন এক বিশাল মিউজিয়াম। তবে প্রশ্ন উঠছে, কেন বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশে আসতে চান না?
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ
রাবিপ্রবি ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, বাংলাদেশের অসংখ্য দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে, যেমন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সেন্টমার্টিন, সাজেক, কাপ্তাই লেক, সুন্দরবন, কুয়াকাটা, টাঙ্গুয়ারহাওর ইত্যাদি। এসব স্থান পরিদর্শন করতে প্রতিদিন হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশে আসে। তবে, বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটক আসার প্রবণতা একেবারেই কম।
বিদেশি পর্যটকদের আসার প্রধান বাধা
জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভিসা পদ্ধতি জটিল, সেবার মান সন্তোষজনক নয়, এবং দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ কিছুটা অস্থিতিশীল। এছাড়াও, পর্যটন স্পটগুলিতে সেবার মানের তুলনায় ব্যয় অনেক বেশি, নিরাপত্তার অভাব এবং অবকাঠামোগত সমস্যাও রয়েছে। এসব কারণে বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী হন না।
পর্যটন খাতে উন্নতি জরুরি
সিবিসিসি ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “বর্তমান সেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা জরুরি। যারা এ খাতে পড়াশোনা করছেন, তাদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ দিতে হবে এবং এ খাতে ভালো চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।” বাংলাদেশের পর্যটন খাত বর্তমানে জিডিপির মাত্র ৩-৪% অবদান রাখে, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
সংস্কৃতি ও দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য
বাংলাদেশের চিন্তাধারা পর্যটনবান্ধব নয় বলে বিদেশি পর্যটকরা দেশের কিছু সংস্কৃতির প্রতি অপরিচিত। বিশেষত, নারীরা এখানে কিছু ক্ষেত্রে যে পোশাক পরতে পারেন না, কিংবা পানীয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, যা অনেক বিদেশি পর্যটকের কাছে অস্বস্তিকর।
ভবিষ্যতে বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে গবেষণার প্রয়োজন
দেশে বিদেশি পর্যটক আনতে হলে পর্যটন খাতের অবকাঠামো, পরিবহন ব্যবস্থা, সেবার মান এবং জনশক্তির দক্ষতা বাড়াতে হবে। গবেষণা করে জানা জরুরি যে, বিদেশি পর্যটকরা আসছেন না কেন এবং কোথায় উন্নতি করা দরকার। এজন্য বৃহত্তর উদ্যোগ প্রয়োজন, যাতে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।
পর্যটন খাতকে রপ্তানি খাতে পরিণত করা সম্ভব
পর্যটন খাত একটি দেশের বড় রপ্তানি খাত হতে পারে। অন্যান্য রপ্তানি পণ্য যেমন বিদেশে পাঠাতে হয়, তেমনি পর্যটন খাতে বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে হবে। এই খাতটির পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন, অবকাঠামো এবং অন্যান্য বিষয়গুলোতে জোর দিতে হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।